(ভোর হয়ে আসছে, আকাশের শেষ তারারা নিভে যাচ্ছে। পুবের আকাশে সামান্য লালচে আভা। পূর্বা সেদিকে তাকিয়ে আছে। নিখিলেশ পাশে এসে দাঁড়ায়।)
নিখিলেশঃ কি দেখছ?
পূর্বাঃ সূর্য উঠবে।
নিখিলেশঃ তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে?
পূর্বাঃ মাথা খারাপ? কেন?
নিখিলেশঃ তুমি জানো না এখানে সূর্য ওঠে না?
পূর্বাঃ সূর্য ওঠে না? কেন?
নিখিলেশঃ পূর্বা তুমি জান, এখানে কোন সূর্য নেই।
পূর্বাঃ সূর্য নেই? তাহলে ওই আলো?
নিখিলেশঃ পূর্বা তুমি বোধহয় এখনো ঘুমের ঘোরে রয়েছ। দীর্ঘ তেত্রিশ বছরের হিম শীতল ঘুম, তার ঘোর তো একটু থাকবেই। তুমি ভুলে যাচ্ছ, আমরা
এক্স-২০৬ গ্রহের মাটিতে দাঁড়িয়ে আছি। এই গ্রহ নিজেই তার আলো তৈরি করে – সেই আলোই তুমি দেখছ।
পূর্বাঃ এক্স ২০৬? কই আমার তো কিছু মনে পড়ছে না। এটা পৃথিবী নয়? (নিখিলেশ মাথা নেড়ে না বলে) এখানে সূর্য নেই? (নিখিলেশ চুপ করে থাকে)
চুপ করে থেক না। প্লিজ কিছু বল। আমার কিছু মনে পড়ছে না। আমরা এখানে কেন? আমার দেশ, আমার পৃথিবী, আমার সূর্য – কোথায়?
নিখিলেশঃ আমাদের সূর্য মরে গেছে পূর্বা। আমাদের পৃথিবী মৃত। আমাদের দুজনকে পাঠান হয়েছে আমাদের সেই মৃত পৃথিবী থেকে তেত্রিশ হাজার আলোকবর্ষ দূরের এই এক্স-২০৬ গ্রহে। আমাদের উপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এই গ্রহকে পৃথিবী করে তোলার। আমরাই এই গ্রহের আদম ইভ।
পূর্বাঃ কিন্তু কেন? আমি কী পাপ করেছি?
নিখিলেশঃ তুমি নও, আমরা সবাই করেছি। এখন সময় প্রায়শ্চিত্যের।
(নিখিলেশ পূর্বা হাত ধরাধরি করে দাঁড়িয়ে থাকে। আলো নিভে যায়।)